বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি হস্তক্ষেপ চাই
লিখেছেন লিখেছেন জহির উল হক ২৮ মে, ২০১৪, ১০:২৫:৩৯ রাত
একটি রাষ্ট্রের প্রধান উপাদান
জনসংখ্যাকে যদি উত্পাদনশীল
হিসাবে গড়া যায় তবে সেই
জনসংখ্যা ঐ রাষ্ট্রের জন্য
সম্পদে পরিণত
হয় । কিন্তু সেই জনসংখ্যাকে দক্ষ
উত্পাদনশীল জনসম্পদ
হিসাবে তৈরী করতে গেলে রাষ্ট্রের
প্রয়োজন তার জনগণের মৌলিক
চাহিদা গুলো নিশ্চিত করা । কিন্তু
সরকারের দুর্নীতির কারণে বরাবরের মত
এই রাষ্ট্র ব্যর্থ ।তাই রাষ্ট্র ও তার
জনগণকে নির্ভর হতে হয়
বেসরকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের উপর
।
বেসরকারী সংস্থা সব সময়
চেষ্টা করে অধিক মুনাফা অর্জনের
জন্য
।বেসরকারী সংস্থা শিক্ষা,
চিকিত্সা,খাদ্য,বস্ত্র সবকিছু
নিয়ে ব্যবসা শুরু করে যাদের
দৃষ্টি থাকে অধিক মুনাফার দিকে যত
না থাকে সেবার মানের উপর ।
প্রত্যেক বছরই
এসএসসি পরীক্ষাতে GPA 5 পেয়ে পাশ
করছে হাজার হাজার
পরীক্ষার্থী ।এই বছর তা দেড়
লক্ষতে ঠেকেছে ।এই GPA 5
পরীক্ষার্থীদের গলার
কাঁটা হয়ে বিধে যখন
তারা একটা শহর এলাকার
সরকারী কলেজে ভর্তি হতে চায় ।এত
বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য
সরকারি কলেজে আসন অত্যন্ত সীমিত
। আসন
সংকটের কারণে অনেক
শিক্ষার্থী সরকারি কলেজে ভর্তি হওয়ার
সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় ।শহর
অঞ্চলে বসবাসকরী উচ্চবিত্ত ও
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান যখন
সরকারী কলেজে পড়ার সুযোগ পায়
না তখন তারা আশ্রয় নেয়
বেসরকারী কলেজের ।
এছাড়া গ্রামের স্কুল থেকে আসা জিপিএ
৫ প্রাপ্ত অনেক পরীক্ষার্থীও
সরকারি কলেজে সুযোগ
না পেয়ে বেসরকারি কলেজে ভর্তি হয় ।
যার
ফলে শহর অঞ্চলে ব্যঙের ছাতার
গড়ে উঠে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের
নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
তথা বেসরকারী কলেজ ।
মুনাফালোভী এই
কলেজ গুলো তাদের ইচ্ছা মত
ভর্তি ফি ও বেতন আদায় করে নেয়
শিক্ষার্থীদের থেকে ।তাদের
প্রতি হাইকোর্টের ভর্তি ফি কমানোর
নির্দেশ এদের কান পর্যন্ত পৌছায়
না কিংবা পৌছালেও আইন
শ্রীঙ্খলাবাহীনির তদারকির অভাবে সেই
নির্দেশ পালনে বাধ্যবাধকতা থাকে না ।
যার
ফলে নির্বিঘ্নে চলতে থাকে শিক্ষা ব্যবসা
।পরীক্ষার রেজাল্টের আগে থেকেই
মিডিয়ায় চলতে থাকে অসরকারি এই সব
কলেজের প্রচার তথা বিজ্ঞপণ ।
এই সব
বেসরকারী কলেজে ভর্তি হয়ে মধ্যবিত্ত
পরিবারের শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় মরণ
ফাঁদে ।
এছাড়া বর্তমানে গ্রামে-গঞ্জেও
গড়ে উঠছে বিভিন্ন বেসরকারী স্কুল ।
যেখানে রাষ্ট্র বা সরকার ভালভাবে উচ্চ
মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের
চাহিদা পূরণ
করতে পারছে না সেখানে প্রাথমিক ও
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চাহিদা পূরণের
কথা চিন্তা করা অপরিমাণদর্শিতা ।
উচ্চতর শিক্ষার জন্য
যোগ্যতা প্রয়োজন ।সেই
যোগ্যতা অর্জন করতে যে সব
চাহিদা তা সরকার দিতে অনেকটাই ব্যর্থ
।
কেননা এই যোগ্যতা শিক্ষার্থীদের
অর্জিত হয় স্কুল পর্যায় থেকে ।
তাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার
যোগ্যতা অর্জন
করতে না পেরে উচ্চবিত্ত পরিবারের
সন্তানরা উচ্চ শিক্ষার আশায়
ভর্তি হচ্ছে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়
গুলোতে । এই সব
বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া
মধ্যবিত্ত
পরিবারের সন্তানদের জন্য দিবাসপ্ন ।
সম্পূর্ণ ব্যাপারটা একটি দুষ্ট চক্র
মধ্যে আবর্তিত হচ্ছে ।
এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে যেমন
জনগণের সচেতনতা প্রয়োজন
তেমনি সরকারের কিছু সদিচ্ছা ।গ্রামের
শিক্ষার্থীদের
শহরে এসেছে বেসরকারী কলেজের
ব্যবসার উপকরণ না হয়ে গ্রামের কলেজ
গুলোতেই ভর্তি হওয়া উচিত । সরকারের
উচিত গ্রামের কলেজ গুলোর মান
উন্নয়ন করা ।ভাল শিক্ষক নিয়োগ সহ
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ
করা । শহরের কলেজে ভাল
শিক্ষার্থী ভর্তি হয় বলেই এই কলেজ
গুলোর রেজাল্ট ভাল হয় ।এরা ভাল
শিক্ষার্থী তৈরী করে না ।বেসরকারি কলেজ গুলোর ব্যাপারে সরকারি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন ।উচ্চ ভর্তি ফি,বেতন ইত্যাদি বিষয়ে তদারকি প্রয়োজন।
গত বছর থেকে পরীক্ষার আগে যে প্রশ্ন
পত্র ফাঁশের
দুর্নীতি চলছে হয়েছে তা যেকোন
মূল্যে বন্ধ করতে হবে ।
তা না হলে অদূর ভবিষ্যতে দেশের
শিক্ষাব্যবস্থা তথা সমগ্র
দেশ পঙ্গুত্ব বরণ করবে ।
সেই সাথে জিপিএ পাইভের মান
বাড়াতে হবে ।
চাহিদা অনুযায়ী যতটা সম্ভব প্রাথমিক,
মধ্যমিক স্কুল ও শহর
অঞ্চলে সরকারি কলেজ স্থাপন
করতে হবে ।
বিষয়: বিবিধ
৯৩২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন